বলা হয়ে থাকে আমাদের দেশের মেয়েরা নাকি কুড়িতেই বুড়ি হয়ে যায়। আসলেই কি তাই? সত্যি বলতে কি, বিয়ের পরে স্বামী, বাচ্চা, সংসার সব সামলাতে গিয়ে নিজের অসচেতনতায় পেটে মেদ জমে এই মেয়েদেরই যখন শরীর টা হয়ে যায় বেঢপা, বুড়ি না লাগলেও দেখতে কিন্তু কিছুটা হলেও খারাপ লাগে।
গায়ের রং যাই হোক,শরীরের গঠন কিন্তু সৌন্দর্য এবং স্মার্টনেস এর দারুন এক সমন্বয় প্রকাশ করে।
হাতিলের ওই বিজ্ঞাপন টা তো দেখেছেন না?
স্লিম ইজ দ্যা বিউটি!!
আসলেই তাই, আপনি যতদিন নিজের শরীর কে স্লিম রাখতে পারবেন, ফ্যাট চর্বি সবকিছুকে আপনার শরীর থেকে বাই বাই বলতে পারবেন ততদিন অন্যের চোখে কেবল আপনি নান্দনিক থাকবেন, তাই শুধু নয়, আপনার নিজের মনেও শান্তি থাকবে, অন্যরকম একটা স্যাটিসফ্যাকশন থাকবে।
যাই হোক, বিশেষ করে পেটের মেদ নিয়ে আমাদের মেয়েসমাজ অনেকটা হীনমন্যতায় ভোগে। পোস্ট প্রেগন্যান্সি তে এই মেদ কমানো আরো কঠিন আর অসম্ভব প্রায় হয়ে উঠে।
আর অনেকেই জিম এ যেয়ে এই মেদ কমানোর কোন স্টেপ ও নিতে পারেন না৷ বাচ্চা আর সংসার সামলাতেই তাদের দিনের পুরোটা চলে যায়।
আজকের আর্টিকেল এ আমরা আলোচনা করবো পেটের মেদ কমিয়ে ফেলার কার্যকরী সমাধান -ঘরে বসেই! দারুণ না?
চলুন তাহলে ঝটপট দেখি কি সেই উপায় গুলো–
১। দিনের শুরু টা করুন সুন্দর ভাবে। ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে সাথে সাথে মর্নিং টি নিয়ে বসবেন না। মর্নিং টি এর বদলে নিন হালকা গরম পানি, সাথে মিশিয়ে নিন এক চা চামচ লেবুর রস। ব্যাস রোজ সকালে এই লেবু পানি খাওয়ার অভ্যাস টুকু বজায় রাখেন সারাজীবন। ফ্যাট আপনার শরীরে নতুন করে আর জমতেই পারবে না।
২।চিনি খাওয়ার পরিমাণ একেবারে জিরো করে ফেলুন। আপনার যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া টাইপের প্রব্লেম না থাকে, তাহলে চিনি অথবা লবন ইত্যাদি সম্পুর্নরুপে খাওয়া বন্ধ করুন। শুধু চিনি অথবা লবন না, অন্যান্য খাবারের ব্যাপারেও পরিমিত হবেন। যখন খাবার খাবেন, অল্প করে খাবেন। প্রয়োজনে খাবারের ফ্রিকোয়েন্সী বাড়াবেন। কিন্তু খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিবেন।
৩।পেটের মেদ কমানো খুব সহজ কাজ না এটা সত্যি। কিন্তু আপনি যদি সবসময় কিছু নিয়ম ফলো করেন, তা হলে আপনার পেটের মেয়াদ ধীরে ধীরে কমে যাবে। যাই হোক, আপনার রান্নার পদ্ধতি যতটা সম্ভব পরিবর্তন করে ফেলুন। ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে রান্নার পরিবর্তে, স্টিম দিয়ে রান্না করার প্রচলন শুরু করেন। যেসব রান্নায় তেল মসলা একদম ইউজ না করলেই নয়, যেসব খাবারে খুবই অল্প পরিমাণ তেল মসলা ইউজ করুন।
৪। প্রতিদিন সকাল বিকাল নিয়ম করে যোগ ব্যায়াম করুন। ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল পাবেন এ বিষয়ে। নিয়মিত যোগব্যায়াম এবং পরিমিত ঘুম আপনার শরীর এবং মন কে প্রফুল্ল রাখে। এবং আপনার পেট এর অযাচিত মেদ কমাতে বিভিন্ন কার্যক্রমে আপনার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তরান্বিত করে।

৫। পেট এর মেয়াদ কমাতে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। আপনি জিম এ না গিয়েও বাসায় নিজ খরচে কিছু ইন্সট্রুমেন্ট কিনে নিতে পারেন। অথবা ইন্সট্রুমেন্ট ছাড়াও পেটের মেয়াদ কমাতে বিভিন্ন ব্যায়াম এর টিউটোরিয়াল ইউটিউব থেকে দেখে নিতে পারেন। তবে যেসব মহিলাদের সি সেকশন বা সিজার হয়েছে, তারা ব্যায়াম করার আগে কোন ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিবেন।
৬। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন, ভাত রুটি, প্রোটিন বা আমিষ যেমন, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল ইত্যাদি পরিমাপ মত খাবেন। এসব খাবারের পরিবর্তে প্রচুর সালাদ খাবেন, শাকসবজী ও দেশীয় ফলফলাদি খাবেন। দুধ যদি খেতেই হয়, ননি তোলা দুধ খাবেন। আর প্রতিদিন একটি করে ডিম খাবেন, এর বেশী নয়।
পরিশেষে,
পেটের মেদ জমতে কম সময় লাগলেও এই মেদ দুর করা কিন্তু সময়সাপেক্ষ কাজ। একটা লম্বা সময় ধরে নিয়মমাফিক খাদ্যাভ্যাস, যোগাসন, ফ্যাট বার্ন করার ব্যায়াম ইত্যাদি ফলো করলে আস্তে আস্তে আপনি সুফল পাওয়া শুরু করবেন।
এই হলো -পেটের মেদ কমিয়ে ফেলার কার্যকরী সমাধান -ঘরে বসেই! কেমন লাগলো আমাদের আর্টিকেল? জানাবেন অবশ্যই।
ধন্যবাদ সবাইকে।
No Comments